Thursday, April 6, 2017

শুধু অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা জানতেন নাজমুল!


শুধু অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা জানতেন নাজমুল! আমরা জানতাম, অধিনায়ক হিসেবে এটিই ওর শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। কিন্তু ঘোষণাটা কখন দেবে, সেটি পুরোপুরি ওর নিজের ওপরই নির্ভর করছিল। আমরা ভেবেছিলাম দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগেই মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেবে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি থেকেই অবসরের কথা কেন বলল, এটা আমি এখনো জানি না।
কলম্বো থেকে প্রতিনিধি : আগের দিন সন্ধ্যায় মাশরাফি বিন মর্তুজা টি-টোয়েন্টি থেকে তাঁর বিদায়ের বিষাদই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সর্বত্র। আর পরদিন সকালে সেই অবসরের নেপথ্যের খবরের সন্ধানে বেরিয়ে পাওয়া গেল রীতিমতো চমকপ্রদ এক তথ্য। যেটি দিলেন খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান নিজেই। তিনি নাকি জানতেন যে মাশরাফি অধিনায়কত্বই ছাড়বেন শুধু, কিন্তু টি-টোয়েন্টি খেলাটা কিছুতেই নয়!
এ বিষয়ে বোর্ডপ্রধানের বক্তব্য, ‘আমরা জানতাম, অধিনায়ক হিসেবে এটিই ওর শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। কিন্তু ঘোষণাটা কখন দেবে, সেটি পুরোপুরি ওর নিজের ওপরই নির্ভর করছিল। আমরা ভেবেছিলাম দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগেই মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেবে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি থেকেই অবসরের কথা কেন বলল, এটা আমি এখনো জানি না। ’
অবশ্য গত জানুয়ারির নিউজিল্যান্ড সফরে টি-টোয়েন্টি থেকে মাশরাফির অবসরের খবরও নাজমুলের মুখেই পরিবেশিত হয়েছিল। যদিও নিজের দেওয়া সেই খবরকে পরে নিজেই ‘গুজব’ বলে অভিহিত করেও কম সাড়া ফেলেননি তিনি। প্রেক্ষাপট যেহেতু আগে থেকেই তৈরি করে রাখা, তাই এই প্রশ্ন ওঠাও অস্বাভাবিক নয় যে চাপের মুখেই সরে গেলেন না তো মাশরাফি?
নাজমুল দাবি করলেন কোনো চাপই ছিল না, ‘ওর ওপর অবসরের কোনো চাপই ছিল না। প্রশ্নই ওঠে না এটার। ’ সেই সঙ্গে আরো যোগ করেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে যা কথা হয়েছে, তাতে ওর শুধু নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা। এবং টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডেও থাকার কথা। এখন যদি ও ফিট থাকে, তাহলে আমরা কেন ওকে খেলাব না? গতকালও (প্রথম টি-টোয়েন্টিতে) সে সবচেয়ে ভালো বোলিং করেছে। নিজে থেকে খেলতে না চাইলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আমাদের তো ওকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ’
পারফর্ম যখন করছেন, তখন দলকে অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্বও দিতে থাকা মাশরাফিকে অধিনায়কের পদ থেকে সরানোর প্রয়োজন কেন হলো? এ প্রশ্ন ওঠাও খুব স্বাভাবিক। নাজমুল পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনার কথাই বলতে চাইলেন। যেটি ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়ার কথা আছে। এত দিন দুই বছর পর পর হয়ে এলেও আইসিসি প্রতি চার বছরে একবার করার সিদ্ধান্তেও অবশ্য স্থির থাকতে পারেনি। আর্থিকভাবে লাভজনক খাত হওয়ায় দুই বছর পরই আবার হতে পারে। তাই হতে পারে ২০১৮ সালেও। যার আয়োজক হওয়ার সম্ভাবনা আছে দক্ষিণ আফ্রিকার।    
তবে যখনই হোক না কেন, নতুন অধিনায়কের অধীনে সেই বিশ্বকাপের জন্য দল তৈরি করার চিন্তার কথাই বললেন নাজমুল, ‘সামনে আমাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। ওই সময়ে হয়তো মাশরাফি খেলবে না। সে হয়তো আগামী এক-দেড় বছর খেলবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নেতৃত্বে তাই পরিবর্তন আসতই। নতুন অধিনায়ক যাতে সময় নিয়ে দলটা গোছাতে পারে, সেই চিন্তাও ছিল আমাদের। ’
তবে এই চিন্তা যে খুব জরুরি ছিল না, সেটি পরে নিজের আরেক কথাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। মাশরাফির ওয়ানডে ভবিষ্যৎ নিয়ে জিজ্ঞাসার জবাবে তো বিদায়ী টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের ক্যারিয়ার আরো লম্বাই দেখলেন তিনি। এই ফরম্যাটে অধিনায়ক বদলানোর কোনো পরিকল্পনাই নেই বলে যেমন জানালেন, তেমনি এটাও বলে দিলেন যে মাশরাফি যত দিন চাইবেন তত দিনই খেলবেন।
এমনকি মাশরাফি ২০১৯-এর ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেললেও অবাক হবেন না তিনি, ‘ওয়ানডে অধিনায়কত্বে পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। আমরা এক বছর আগে মনে করেছিলাম, মাশরাফির জন্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই হবে শেষ। এখন মনে হচ্ছে ও আরো অনেক বেশি দিন খেলতে পারবে। ও যত দিন ফিট থাকে খেলবে। স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ার কোনো সুযোগই নেই। যখন সে অবসর নেবে, তখনো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে থাকবে। এটাই আমাদের ইচ্ছে। ’
আপাতত টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বটা নিয়ে ফেলার ইচ্ছেরই বাস্তবায়নই হলো শুধু!
Related Posts

0 comments: