গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর সাত কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হওয়ার পরীক্ষা ও পাঠ কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছিল অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী। নীতিমালা তৈরিতে গত ১ এপ্রিল সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে বৈঠকে বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ওই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকে গৃহীত নীতিমালার ফাঁস হওয়া একটি কপি পূর্বপশ্চিমের হাতে এসে পৌঁছেছে।
বৈঠকে মোট ১২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নীতিমালার কপি ঢাবির কলেজ পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে অধিভুক্ত কলেজগুলো পাঠানো হয়েছে। পাঠকদের জন্য নীতিমালাটি প্রকাশ করা হল-
০১. মাস্টার্স শেষ পর্ব, অনার্স ৩য় বর্ষ,ডিগ্রী (পাস) ১ম ও ৩য় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফরম পূরণ করেছে, কিন্তু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি, তাদেরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নতুন করে ফরম পূরণ করতে হবে। এজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে কোনো ফি নেওয়া হবে না।
পরীক্ষা কমিটি গঠন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ইত্যাদি কাজ কলেজ অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আলোচনা করে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
০২. যে সকল ছাত্র-ছাত্রীর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরর অধীনে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য কলেজ কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
০৩. যে সকল ছাত্রছাত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, যাদের ফলাফল স্থগিত আছে বা ফলাফল প্রকাশিত হয়নি, তাদের ফলাফল প্রকাশের দায় দায়িত্ব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরর। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষগণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
০৪. কলেজে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ও রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যারা বিশেষ পরীক্ষায় ও গ্রেড উন্নয়ন করতে ইচ্ছুক.. তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
০৫. সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার বাদে অন্যান্য দিনে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হোক।
০৬. প্রত্যেক কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হোক। তবে এক কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
০৭. যে সকল শিক্ষার্থীর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে.. প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়া সাপেক্ষে তাদের রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হোক।
০৮. মাস্টার্স শেষ পর্ব ও ডিগ্রী (পাস) ১ম বর্ষে ভর্তির জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রনীত ২য় ও চূড়ান্ত অপেক্ষমান মেধা তালিকা প্রেরণের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অধ্যক্ষবৃন্দকে অনুরোধ করে রেজিস্ট্রার দপ্তর কর্তৃক পত্র প্রেরণ করা হোক।
০৯. কলেজ সমূহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তিকৃত ও রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারসহ অনান্য প্রয়োজনীয় তথ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করে ছাএছাএীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
১০. যে সব কলেজে ডিগ্রী (পাস) কোর্স চালু সেই সব কলেজ থেকে কোন ছাত্র-ছাত্রী বহিরাগত পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে ইচ্ছুক হলে, সেই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মঅনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন প্রদান ও পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
১১. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রণীত কোর্স কারিকুলাম অনুযায়ী আপাতত ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। কলেজে প্রচলিত কোর্স সমূহের কোর্স দ্রুত সংশোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় করার যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
১২. কলেজগুলোতে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণি, পাস কোর্স,ও মাস্টার্স কোর্সে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিওিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ গত ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেড়িয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
0 comments: